News

দেশে ‘মারভেল অ্যাভেঞ্জার্স’ উপহার দিচ্ছে বাইনারিলজিক

দেশে ‘মারভেল অ্যাভেঞ্জার্স’ উপহার দিচ্ছে বাইনারিলজিক

প্রযুক্তির দুনিয়ায় ইন্টেল এক চিরপরিচিত নাম। বিশ্বের প্রথম সফল মাইক্রোপ্রসেসর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইন্টেল, যার উদ্ভাবনীয় আবিষ্কার মানবসভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে অনন্য উচ্চতায়, যার হাত ধরে আজকের কমপিউটিং প্রযুক্তি এক অনন্য জায়গায় পৌঁছে গেছে। সেই বিশ্বসেরা প্রসেসর নির্মাতা ইন্টেল নতুন অফার ঘোষণা করেছে।

এ অফারের আওতায় ইন্টেলের নবম ও দশম প্রজন্মের ‘কে’ সিরিজের প্রসেসরের সাথে বিনামূল্যে পাওয়া যাবে ‘অ্যাভেঞ্জার্স গেম’। মারভেলের জনপ্রিয় অ্যাভেঞ্জার্স সিরিজের চলচ্চিত্রের পর গত ৪ সেপ্টেম্বর অবমুক্ত হয়েছে প্রায় ৫ হাজার টাকা মূল্যের ‘মারভেল অ্যাভেঞ্জার্স’ গেম।

ইন্টেলের এ আন্তর্জাতিক অফারটি দেশের ব্যবহারকারীদের জন্য এনেছে প্রযুক্তিপণ্য বিপণনকারী কোম্পানি স্টার টেক অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। অফার উপলক্ষে ইন্টেল নবম ও দশম জেনারেশনের ‘কে’ সিরিজের প্রসেসরগুলো সাধারণ ইন্টেলের বক্সে না এসে অ্যাভেঞ্জার্সে থিমের বক্সে নতুন আঙ্গিকে এসেছে।

অফারটি ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে, যা চলবে ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। স্টার টেক অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গেমারদের জন্য এটি দারুণ সুযোগ। বিশ্বসেরা প্রসেসরের পাশাপাশি অসাধারণ একটি গেমের অভিজ্ঞতা নিতে পারবেন দেশের ব্যবহারকারীরা। দেশের গেমিং কমিউনিটিতে ব্যাপক সারা জাগাতে সক্ষম হবে ইন্টেলের এই অফারটি।

বিশ্ব সেরা হওয়ার পরও ইন্টেল কেন এমন অফার দিল সেই বাণিজ্যিক যুদ্ধে না গিয়ে গেমিংয়ের ক্ষেত্রে প্রসেসরের সক্ষমতা ও ক্ষমতা নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক। সাধারণ ইউজার, গেমার এবং কনটেন্ট ক্রিয়েটর এই তিন ভাগের মানুষকে লক্ষ্য করে প্রসেসর তৈরি করা হয়। সাধারণ ইউজারদের প্রসেসর নিয়ে তেমন মাথা ঘামাতে হয় না। কারণ মোটামুটি একটি প্রসেসর সব সাধারণ কাজ, যেমন টাইপিং, ফেসবুকিং, ইউটিউব ইত্যাদি খুব ভালোভাবে করতে পারে। কিন্তু গেমারদের প্রয়োজন কোর সিঙ্গেল থ্রেডে বেশি পারফর্মেন্স, আর ক্রিয়েটরদের প্রয়োজন মাল্টিকোর পারফরম্যান্স। ইন্টেল প্রসেসরগুলোর সিঙ্গেল কোর পারফরম্যান্স বরাবরই ভালো ছিল এবং দীর্ঘদিন রাজত্ব করায় গেমিং ইন্ডাস্ট্রিতে ইন্টেলের প্রসেসরকে লক্ষ্য করে গেমগুলো অপটিমাইজ করা হতো। কিন্তু জেন সিরিজে নতুন করে এএমডি সিঙ্গেল কোর পারফরম্যান্স উন্নতির দিকে মনোযোগ দেয়, আর মাল্টিকোর নিয়ে তারা আগে থেকেই অনেক এগিয়ে থাকার ফলে এই নতুন প্রসেসরগুলোর মাল্টিকোর পারফরম্যান্সও ইন্টেলের প্রসেসরগুলোকে ছাড়িয়ে যায়।

এএমডির আরেকটি আকর্ষণীয় দিক ছিল তাদের প্রোডাক্টের দাম। প্রতিযোগিতায় টিকতে তারা তাদের প্রসেসরের দাম ইন্টেলের তুলনায় কম রাখত। রাইজেন আসার আগে টপ টিয়ারের প্রসেসর লাইনআপগুলোয় ইন্টেল একচেটিয়া ছিল। ফলে প্রসেসরগুলোর দাম অনেক বেশি ছিল। রাইজেনের সহজলভ্যতা ও পারফরম্যান্সের জন্য খুব দ্রæতই জনপ্রিয়তা লাভ করে। তবে ইন্টেলের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায় এএমডির জেন ২ আর্কিটেকচার। ৭ ন্যানোমিটার প্রযুক্তিতে তৈরি এই প্রসেসরগুলো ক্রিয়েটর এবং গেমারদের মাঝে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। ২০১৯-এর জুলাইয়ে রাইজেন ৯ উন্মোচন করে এএমডি, যার বেজ মডেলের কোর সংখ্যা ইন্টেলের আই ৯-এর সর্বোচ্চ মডেলকেও ছাড়িয়ে যায়। এমন পরিস্থিতি মোকাবেলায় এএমডির রাইজেন চিপকে টেক্কা দিতে দশম প্রজন্মের কমেট লেক সিপিইউ আনে ইন্টেল। ১৮ কোরের ফ্ল্যাগশিপ আই ৯-১০৯৮৮৯ এক্সই মডেলসহ এক্স সিরিজের একাধিক চিপ উন্মোচন করে। নতুন সানি কোভ কোর মাইক্রো আর্কিটেকচারের ওপর ভিত্তি করে দশম প্রজন্মের ইন্টেল কোর মোবাইল প্রসেসরের জন্য ইন্টেলের কোড নাম দেয়া হয় আইস লেক। দশম প্রজন্মের প্রসেসরের ক্লক স্পিড পৌঁছে ৫.৩০ গিগাহার্টজ গতিতে। ১০ কোর ২০ থ্রেড ডিভাইসের উচ্চমাত্রার ব্যান্ডউইডথ সুবিধা দেয়। আর এ কারণেই ইন্টেল কোর আই ৯-১০৯০০-কে প্রসেসরকে বলা হচ্ছে বিশে^র সবচেয়ে ক্ষিপ্র ক্ষমতার গেমিং প্রসেসর। দশম প্রজন্মের প্রসেসরে রয়েছে সর্বোচ্চ ৩.০ টার্বো বুস্ট প্রযুক্তি। এটি সমর্থন করবে ডিডিআর ফোর-২৯৩৩ র‌্যাম। এতে আছে ইন্টেল ৪০০ সিরিজের চিপসেট।

গেমারদের স্বপ্নের এই প্রসেরটি দেশজুড়ে স্টার টেকের শোরুম ছাড়াও পাওয়া যাচ্ছে স্টার টেকের ওয়েবসাইটেও। কেনা যাচ্ছে অনলাইনেও। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বাইনারিলজিক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইন্টেলের নবম ও দশম জেনারেশনের ‘কে’ প্রসেসর আগে সাধারণ বক্সে এলেও এখন থেকে অ্যাভেঞ্জার্সের বক্সের নতুন আঙ্গিকে পাওয়া যাবে। এ ছাড়া অ্যাভেঞ্জার্সের একটি পোস্টারও দিচ্ছে বাইনারিলজিক।
বাংলাদেশে ইন্টেলের প্লাটিনাম অংশীদার ‘বাইনারিলজিকের প্রধান নির্বাহী মনসুর আহমদ চৌধুরী জানান, বাইনারিলজিক বাংলাদেশে ইন্টেলের প্লাটিনাম অংশীদার। সে হিসেবে তারা সারা বিশে^র সাথে তাল মিলিয়ে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ইন্টেলের নবম ও দশম প্রজন্মের যেকোনো আনলক প্রসেসর কিনলে গেমারদের বিনামূল্যে ৫৯ ডলার মূল্যমানের মারভেল অ্যাভেঞ্জার্স গেমটি উপহার দিতে পেরে খুবই গৌরব বোধ করছেন। অফার দেয়ার দুই দিনের মধ্যে পাওয়া যাবে গেমটির ১০টির বেশি প্রসেসর। এই উপহার দেশের গেমারদের উজ্জীবিত করবে নিঃসন্দেহে। ভবিষ্যতে গেমারদের আনন্দকে আরও বাড়িয়ে তুলতে করোনা পরিস্থিতি ভালো হলে তারা একটি গেমিং টুর্নামেন্ট আয়োজন করবেন।

Leave a Reply